অসংক্রামক রোগ       

একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় না অর্থাৎ ছোঁয়াচে না সেসব রোগকে অসংক্রামক রোগ বলে। দুনিয়াজুড়ে অসংক্রামক বাঁধি এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ,হমদরোগ   ইত্যাদি অসংক্রামক ব্যাধি এখন দুনিয়াজুড়ে অসংক্রামক ব্যাধি ও আক্রান্ত মানুষের মধ্যে তাদের পূর্বপুরুষের রোগের জোরালো পারিবারিক ইতিহাস থাকে। এ রোগপুংলার থেকে। আংক্রামক বা জিনগত ইতিহাস খুবই গুরত্বপূর্ণ। তার সাথে যোগ হয় পরিবেশগত উপাদান, যেমন- পরিবেশ দূষণ, অস্বাস্থ্যকর ও বাজে খাদ্যাভাস, কায়িক শ্রমের অভাব, ধুমপান, মানসিক চাপ ইত্যাদি দুইয়ে মিলে বর্তমান সময়ে অনেক কম বয়সেই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এ ধরনের রোগে। ফলে পৃথিবীজুড়ে অনেক মানুষ কম বয়সে কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে। সময়মতো সচেতন হলেই বলের আক্রান্ত থাকা এসব রোগ প্রতিরোধ করা সহজ।


        খোস-পাঁচড়া বা স্ক্যাবিস        



শুভান্ত সংক্রামক একটি রোগের নাম স্ক্যাবিস, যাকে আমরা সাধারণত খোস-পাঁচড়া বলে জানি। এই খোস-পাঁচড়ার কারণ মাইট নামের একটি পোকা। এটি একজনের শরীরের সাথে অন্য একজনের শরীরের স্পর্শে খুব সহজেই ছড়িয়ে যায়। ঘনবসতিপূর্ণ আমাদের দেশে পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে সহজেই অন্যদেরও এই রোগটি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকি বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী এই রোগে আক্রান্ত হলে তার কাছ থেকে অন্য সকল শিক্ষার্থীর সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অতি দ্রুত এর চিকিৎসা করা প্রয়োজন।


ঘামাচির মতো ছোট ছোট ফুসকুড়ি বা দানা দেখা যায় সারা শরীরে। তবে প্রথমদিকে হাত ও পায়ের আঙুলের ফাঁকে, কব্জির তালুর, পাশে, কোমরে, বগলে, পিঠে এই দানা দেখা যায়। এ সমস্ত জায়গায় বিশেষ করে রাতে অনেক চুলকানি হয়।


চিকিৎসা: স্ক্যাবিস একটি নিরাময়যোগ্য রোগ। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খেলে এবং লোশন লাগালে এটি সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যায়। চিকিৎসার শুরু থেকেই রোগীর ব্যবহার্য সব ধরনের কাপড়চোপড় সাবান দিয়ে সিদ্ধ করে ধুয়ে ফেলতে হয়। পরিবারের জনাদের এ রোগ থাকলে তাদের চিকিৎসাও, একই সঙ্গে করাতে হয়। এই কাজগুলো না করে শুধু চিকিৎসা করে কোনো লাভ নেই: বরং বারবার হয়ে রোগ আরও জটিল হয়। সুতরাং নিয়মমতো ওষুধ ব্যবহার না করলে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে এর তীব্রতা বেড়ে যায়। পরবর্তীতে এর-প্রর্ডবি আমাদের কিডনির ওপরে পড়তে পারে এবং কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা তৈরি হতে পারে।


      দাদ রোগ       


এক ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণের ফলে আমাদের শরীরে দাদ রোগ হয়। রিং ওয়ার্ম নামের এক ধরনের ছত্রাকের কারণে দাদ রোগ আমাদের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় যেমন- কুচকি, মাথার ত্বক, পিঠে, ঘাড়ে, বুকে, হাতে, পায়ে এবং নখে হতে পারে। আমাদের শরীরের যে সমস্ত জায়গা বেশি ঘামে, সেখানে অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন থাকলে এই রোগ হতে পারে এবং এটি একজনের শরীরের থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়াতে পারে।


লক্ষণ: চামড়ার উপরে গোলাকার একটি ক্ষতের তৈরি হয়। যার চারপাশের কিনারা লাল এবং উঁচু হয়। দিন দিন এই গোল চাকার আকার বাড়তে থাকে এবং চুলকানি হয়। মাথার ত্বকে খুশকি হয়, চুল পড়ে যেতে পারে, নখ অস্বচ্ছ এবং ভঙ্গুর হয়।


প্রতিকার: নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা এবং চিকিৎষ্কের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ ব্যবহার করলে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


             র‍্যাবিস বা জলাতঙ্ক               



র‍্যাবিস বা জলাতঙ্ক অত্যন্ত মারাত্মক জীবন হরণকারী একটি সংক্রমণের নাম। জলাতঙ্ক সংক্রমিত কুকুর, বিড়াল, ইদুর, বানর, খরগোশ, বাদুড়, এমনকি শেয়ালের কামড় বা আঁচড়ে এই রোগ আমাদের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। র‍্যাবিসে আক্রান্ত হলে মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু উপরিউক্ত প্রাণীসমূহের কামড় বা আঁচড়ের পরও এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এজন্য অবশ্যই অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভ্যাকসিন বা টিকা নিতে হবে। এই রোগ প্রতিরোধে উপরিউক্ত প্রাণীগুলোর সাথে অপ্রয়োজনীয় মেলামেশা করা যাবে না। যদি বাসা বাড়িতে কুকুর বা বিড়াল পোষা হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই এদেরকে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন বা টিকা দিতে হবে।


          ডায়াবেটিস          


অগ্ন্যাশয়ের ভেতর আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যানস নামক এক ধরনের গ্রন্থি আছে, এই গ্রন্থি থেকে ইনসুলিন (Insulin) নিঃসৃত হয়। ইনসুলিন হলো এক ধরনের হরমোন, যা দেহের শর্করা পরিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। অগ্ন্যাশয়ে যদি প্রয়োজনমতো ইনসুলিন তৈরি না হয় তবে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থায়িভাবে বেড়ে যায়, প্রস্রাবের সাথে গ্লুকোজ নির্গত হয়। এ অবস্থাকে বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস মেলিটাস (সংক্ষেপে ডায়াবেটিস) বলে। ডায়াবেটিস প্রধানত দুই ধরনের, টাইপ-১ এবং টাইপ-২। টাইপ-১ এ আক্রান্ত রোগীর দেহে একেবারেই ইনসুলিন তৈরি হয় না। তাই নিয়মিতভাবে ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন নিতে হয়। অন্যদিকে টাইপ-২ রোগীর দেহে আংশিকভাবে ইনসুলিন তৈরি হয়। এক্ষেত্রে ওষুধ, অগ্ন্যাশয় কোষকে শরীরের জন্য পরিমিত ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে। তবে টাইপ-২ ডায়াবেটিসেও কোনো না কোনো পর্যায়ে ইনসুলিনের স্থায়ী ঘাটতি হয়ে যেতে পারে কিংবা বিভিন্ন অসুখ বা চিকিৎসা পদ্ধতির অংশ হিসেবে সেই সব ওষুধ বন্ধ রাখতে হতে পারে, তখন ইনসুলিন ছাড়া উপায় থাকে না। এ রোগটি সাধারণত বংশগতি

Leave a Comment