ক্রেবস্ চক্র ( Kreb's cycle) 




প্রতি অনু অ্যাসিটাইল-CoA মাইটোকন্ড্রিয়ার মধ্যে ধারাবাহিক রাসায়নিক বিক্রিয়া সমন্বিত একটি চক্রে প্রবেশ করে এবং ভেঙে গিয়ে CO₂ ও H₂O উৎপন্ন করে। এই সাথে এক অণু FAD এবং তিন অণু NAD বিজারিত হয়। আবিষ্কারক Sir Hans Krebs (1837)-এর নাম অনুসারে চক্রটির নাম দেয়া হয়েছে ক্রেবস চক্র। চক্রের মধ্যে নামমাত্র প্রারম্ভিক বিন্দু হিসেবে সাইট্রিক এসিড থাকে এবং চক্র শেষে আবার সাইট্রিক এসিড উৎপন্ন হয়। এ জন্য চক্রটিকে সাইট্রিক এসিড চক্র বলে। সাইট্রিক এসিডের তিনটি কার্বোক্সিল গ্রুপ থাকে বলে একে আবার ট্রাইকার্বোক্সিলিক এসিড (TCA) চক্রও বলা হয়। মাইটোকন্ড্রিয়ার ধাত্রের মধ্যে ক্রেবস্ চক্র সংঘটিত হয়। ক্রেবস্ চক্রের ধারাবাহিক বিক্রিয়াগুলো নিচে দেয়া হল:

১। সাইট্রিক এসিড সৃষ্টি: অ্যাসিটাইল CoA প্রথমে অক্সালোঅ্যাসিটিক এসিডের সাথে মিলিত হয়ে সাইট্রিক এসিড গঠন করে। সাইট্রেট সিনথেটেজ (citrate synthetase) নামক এনজাইমের ক্রিয়ায় এই বিক্রিয়া সংঘটিত হয়।


২। ডিহাইড্রেশন (Dehydration): অ্যাকোনাইটেজ (aconitase) এনজাইমের প্রভাবে সাইট্রিক এসিড থেকে পানির অণু অপসারিত হয়ে তা সিস্-অ্যাকোনিটিক (cis-aconitic) এসিডে পরিণত হয়।


৩। হাইড্রেশন (Hydration): ঐ একই এনজাইমের প্রভাবে সিস্-অ্যাকোনিটিক এসিডে পুনরায় পানি যুক্ত হয়ে অ্যাইসোসাইট্রিক (isocítric acid) এসিড গঠন করে।

৪। ডিহাইড্রোজেনেশন-I (Dehyrogention-I): আইসোসাইট্রেট ডিহাইড্রোজিনেজ (isocitrate dihydrogenase) এনজাইমের উপস্থিতিতে আইসোসাইট্রিক এসিড হতে হাইড্রোজেন অপসারিত হয়ে অক্সালোসাকসিনিক এসিড (oxalosuccinic acid) গঠন করে। এসময় NADP হাইড্রোজেন গ্রহণ করে বিজারিত হয়।


৫। ডিকার্বোক্সিলেশন -I (Decarboxylation-I): অক্সালোসাকসিনিক এসিড থেকে কার্বোক্সিলেজ এনজাইমের ক্রিয়ায় CO₂ অপসারিত হয়ে ০০ কিটোগ্লুটারিক (c-ketoglutaric) এসিডে পরিণত হয়।

৬। ডিহাইড্রোজেনেশন -II এবং ডিকার্বোক্সিলেশন-II: পাইরুভিক এসিডের মতো ০৫-কিটোগ্লুটারিক এসিডের অক্সিডেটিভ ডিকার্বোক্সিলেশন ঘটে। বিক্রিয়াটি ৫-কিটোগ্লুটারেট ডিহাইড্রোজেনেজ কমপ্লেক্স দ্বারা প্রভাবিত। এতে কো-এনজাইম TPP, লিপোয়েট (lipoiate), NAD', FAD' এবং সাকসিনাইল CoA গঠনকারী কো-এনজাইম প্রয়োজন হয়।)

কাবাসিনাইল CoA থেকে সাকসিনিক এসিডরা অনেক ফসফেরির উপস্থিতিতে (ইনোসিন ডাই ফসফেট) প্রয়োজন হয় একটি ফসফোকাইনেজ-এর সহায়তায় GTP অথবা ITP থেকে ATP তৈরি হতে পারে। হয়।

৭।ফসফোরাইলেশন (Phosphorylation): সাকসিনেট থায়োকাইনেজ (succinate thiokinase) এনজাইমের ক্রিয়ায় সাকসিনাইল COA থেকে সাকসিনিক এসিড গঠিত হয়। এই বিক্রিয়ায় GDP (গুয়ানোসিন ডাই ফসফেট) বা IDP সাকসিনাইন ২০১সফেট) প্রয়োজন হয়। এরা অজৈব ফসফেটের উপস্থিতিতে তারে বা IP-তে রূপান্তরিত হয়। একটি ফসফোকাইনেজ-এর সহায়তায় GTP অথবা ITP থেকে ATP তৈরি হতে পারে।

৮। ডিহাইড্রোজেনেশন -III : সাকসিনিক এসিড হতে পুনরায় সাকসিনেট ডিহাইড্রোজিনেজ এনজাইমের প্রভাবে হাইড্রোজেন অপসারিত হয়ে ফিউমারিক এসিড (fumeric acid) গঠিত হয়। এই বিক্রিয়ায় FAD হাইড্রোজেন পরমাণু গ্রহণ করে। হাইড্রেশন-11: ফিউমারেজ এনজাইমের প্রভাবে ফিউমারিক এসিডে পানি যুক্ত হয়ে ম্যালিক এসিড (malic acid) গঠন করে। 

৯। হাইড্রেশন-II : ফিউমারেজ এনজাইমের প্রভাবে ফিউমারিক এসিডে পানি যুক্ত হয়ে ম্যালিক এসিড (malic acid) গঠন করে। 

১০। ডিহাইড্রোজেনেশন - IV : ম্যালেট ডিহাইড্রোজিনেজ এনজাইমের প্রভাবে ম্যালিক এসিড হতে পুনরায় অক্সলোঅ্যাসেটিক এসিড গঠিত হয়। এক্ষেত্রে NAD হাইড্রোজেন গ্রাহক হিসেবে কাজ করে। একবস চক্রের ধাপসমূহের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা:

Leave a Comment