ICZN-এর নিয়ম অনুসারে বর্ণ, গোত্র, গণ ও প্রজাতির নামকরণ



 প্রানীর নামকরণের আন্তর্জাতিক সংহিতা (ICZN)-এর ১১ ধারা অনুযায়ী বর্ণ, গোত্র, গণ ও প্রজাতির নামকরণ করা বাঞ্ছনীয়। বর্গের নামকরণ: কতকগুলো সম্বন্ধযুক্ত গোত্রের সমন্বয়ে মূলত বর্গ গঠিত হয়। কতকগুলো সাধারণ বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বর্ণ গীত হয়। গোত্রের নামকরণ: ১ম প্রকাশিত গোত্রের নাম অবশ্যই কোনো গণ-এর নাম ভিত্তিক হবে। নামটি হবে ব্যবান এবং কর্তৃকারক বিশেষা।


গোত্রের নামটি সুস্পষ্টভাবে উচ্চতর ট্যাক্সন বা একক হতে হবে। (ii) গোত্রের নামের শেষে বিভক্তি সংশোধন করা হলে আদি তারিখ ও প্রাধিকার স্বীকৃতি পাবে।


(if ১৯০০ সালের পূর্বে প্রকাশিত গোত্রের নাম পুরোপুরি ল্যাটিনসম না হলে পরবর্তীতে কোনো গবেষক নামটি ল্যাটিনসন করলে এবং প্রাণিবিজ্ঞানের দ্বারা তা গৃহীত হলে তরে সেক্ষেত্রে সংশোধিত নামটিও আদি প্রগ্রাধিকার প্রকাশনার তারিখসহ স্বীকৃতি পাবে।



উদাহরণ: Tetracycides একটি গোত্রের নাম রাখেন ১৯৭৫ সালে Donnadieu। এ নামটি পুরোপুরি ল্যাটিনসম না থাকায় ১৮৭৭ সালে Murray নাহটি শুদ্ধ করে Tetranychidae রাখেন। সেক্ষেত্রে নামটি Mumy-এর নামে না হয়ে Gorradie (১৯৭৫) নামে চালু থাকবে। খণ ও প্রজাতির নামকরণ: নিম্নে গণ ও প্রজাতি নামকরণের নীতিমালাগুলো পর্যায়ক্রমে বর্ণিত হলো।


১.প্রজাতির নাম অবশ্য বাইনোমিয়া (binomial) বা দুটি শব্দে গঠিত।


২ প্রজাতি নামের ১ম শব্দটি গণ (genus) এবং ২য় শব্দটি প্রজাতি (species) নাম হিসেবে পরিচিত। উদাহরণ- Homo sapiens মানুষের বৈজ্ঞানিক দাম)। 

৩.গণ নামের ১ম অক্ষর বড় হরফে (Capital letter) হবে।


৪.প্রজাতি নামের ১ম অক্ষর ছোট হরফে লিখতে হয়।


৫.প্রজাতির নামে গণ ও প্রজাতি উভয় নাম থাকতে হয়।


৬.প্রজাতির নাম ছাপা হরফে ইটালিক হয় এবং হাতে লেখা হলে প্রজাতি নামের দুটি শব্দ আলাদাভাবে আন্ডার লাইন করতে হয়।




৭.গণ নাম একবচন বিশেষ্য পদ ও কর্তৃকারক হয়। যেমন- Felis. 

৮.প্রজাতির নাম একাধিক অক্ষর যুক্ত হবে তৎসঙ্গে একটি সরল বা যৌগিক শব্দ হতে পারে। প্রজাতি নামের শব্দটি নিম্নোক্ত যেকোনো একটির মতো হওয়া উচিত।


(i) প্রজাতি নাম একবচন, কর্তৃকারক, বিশেষণ হতে পারে তবে তা গণ নামের লিঙ্গের সাথে সামঞ্জস্য থাকা প্রয়োজন। উদাহরণ: Files marmorata.


(ii) সম্বন্ধ পদে একবচন বিশেষ্য হয়। সম্বন্ধ পদে বহুবচন সাধারণ নাম হয়।


(iii)এক বচনে কর্তৃকারক বিশেষ্য হয়। উদাহরণ- Feles leo


(iv) সম্বন্ধ পদে অস্তিত্ববোধক বিশেষণ রূপে ব্যবহার হয়।


(v) আবিষ্কৃত নতুন প্রাণী যে জীবের সাথে জড়িত প্রজাতি নামটি সেখান থেকে নেয়া যায়। উদাহরণ- Lernaea lasci এখানে এই পরজীবী প্রাণীর নামে প্রজাতি অংশটি পোষক মাছ Gadus luscais এর প্রজাতি luscus থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে।


৯.কোন প্রজাতি সর্বপ্রথম বর্ণিত হলে তার নাম লেখা হয়- এভাবে, যেমন- Callogobius seshaiyai sp.nov


১০.গণ নামটি প্রজাতি নাম হতে পারে। যেমন- Catla catia।


১১. পর্যাপ্ত বুঝানোর জন্য সুনির্দিষ্ট অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার হতে পারে। উদাহরণ- Hydra vulgaris


১২. গুণবাচক নাম প্রজাতির দেহের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী হয়।

উদাহরণ: Abramites microcephalus.



১৩. প্রজাতি আবিষ্কারের সময় প্রাপ্তিস্থানের নাম অনুযায়ী হতে পারে বা ভৌগোলিক অঞ্চলের নামের ভিত্তিতে হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে স্থানের নামের শেষে lensis যুক্ত হয়। উদাহরণ: Varanus begnalensis. 

১৪. আবিষ্কারকের নাম বা বিখ্যাত ব্যক্তিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রজাতি নাম হয়। এক্ষেত্রে পুরুষের নামের শেষে বসে। উদাহরণ: Galeocerdo cuvieri। তবে উল্লেখ্য যে স্ত্রীর নামের ক্ষেত্রে ac যেমন- Gupla থেকে guplae হয়। 

১৫. কোনো জীবের বৈজ্ঞানিক নামের শেষে প্রাধিকারের নাম ও প্রকাশনের তারিখ উল্লেখ করা যায়, তবে তা অত্যাবশ্যক

১৬.বৈজ্ঞানিক নামের শেষে বিরাম চিহ্ন না দিয়ে প্রাধিকারের (author) নাম সংযোজন করা যায়। উদাহরণ- Homo sapiens Linnaeus


১৪. প্রাধিকারের নামের শেষে (,) কমা চিহ্ন ব্যবহার করে সাল দেওয়া হয়, যেমন- Homo sapiens Linnaeus, ১৭৫৭। ১৮. দুইজন প্রাধিকার থাকলে (৫) চিহ্ন দিয়ে দুই জনের নাম উল্লেখ করা যায়, তবে তার দুই এর অধিক থাকলে প্রথম জনের নাম দিয়ে শেষ et al শব্দটি ব্যবহৃত হয়।


১৯. সর্বপ্রথম কোনো প্রাণীর বিজ্ঞানসম্মত নাম যে বিজ্ঞানী প্রদান ও প্রকাশ করেন তিনিই বৈজ্ঞানিক নামের দাবিদার হয়। ২০. অগ্রাধিকার আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত বিজ্ঞানসম্মত নাম বৈজ্ঞানিক নাম হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।


২১. নামকরণের সময় যে প্রাণীকে নমুনা হিসেবে ব্যবহার করা হয় তা আদি টাইপ নমুনা হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। ২২. জীবটি সম্পূর্ণ বা আংশিক চিত্রসহ বিশদ বর্ণনা যিনি কোনো বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকায় প্রকাশ করেন তিনিই প্রাধিকার পাবেন।


২৩. বিজ্ঞানসম্মত বৈজ্ঞানিক নামের অনন্যতা, স্থায়ীত্ব, বিশ্বজননীতার জন্য এটা অবশ্যই ল্যাটিন। ল্যাটিনকৃত (Latinized), ল্যাটিনসম বা ল্যাটিনভর শব্দ দ্বারা গঠন করা বাঞ্ছনীয়।


২৪. ভিন্ন ভিন্ন উৎস থেকে একই প্রাণীর জন্য একাধিক নামের প্রস্তাব এনে নামগুলোর মধ্যে প্রথম প্রকাশিত নাম প্রাধিকারসহ গ্রহণযোগ্য হবে, তবে বাকি নামগুলো প্রতিনাম হিসেবে বিবেচিত হবে।


২৫. কোনো প্রজাতির নাম অংশটি কেউ সঠিক গণে স্থানান্তরিত করে। সেক্ষেত্রে আদি প্রাধিকার বা প্রাধিকারদের নাম বা নামগুলো উল্লেখ করতে চাইলে তা ১ম বন্ধনীর মধ্যে স্থান পাবে এবং বন্ধনীর বাইরে সংশোধক বা সংশোধকদের নাম বা নামগুলো স্থান পাবে। উদাহরণ: Hemilea bipare (Walker, ১৮৬২) Hardy, ১৯৫২।

Leave a Comment