আলফা, বিটা ও গামা ট্যাক্সোনমি সম্পর্কে আলোচনা কর।  যোজক বা ট্যাক্সোনমিক কী-এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো কি?    



শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি দিনে দিনে জটিল থেকে জটিলতর হয়ে ওঠায় শ্রেণিবিভক্তির কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলফা, বিটা ও গামা পর্যায়ে ভাগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।


১। আলফা পর্যায় (a-taxonomy): এ পর্যায়ে কোনো আবিষ্কৃত প্রাণীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যাবলি পর্যালোচনা করা হয় এবং প্রাণীর নামকরণ করা হয়।


২। বিটা পর্যায় (B-taxonomy): এ পর্যায়ে আলোচ্য প্রাণীকে সযত্নে পর্যবেক্ষণ করার পর অর্থাৎ আলফা পর্যায় পেরিয়ে প্রজাতির স্তরে সম্পর্ক নিরূপণ করা হয় এবং নিখুঁত শ্রেণিবিভাগের জন্য প্রজাতিকে প্রাকৃতিক পদ্ধতির নিম্নতর ও উচ্চতর ক্যাটিগরিতে বিন্যস্ত করা হয়।


৩। গামা পর্যায় (y-taxonomy): এ পর্যায়ে জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন জৈবিক দিক বিশ্লেষণ করে অন্তঃপ্রজাতিক প্রকরণের কারণ অনুসন্ধান করা হয়, বিবর্তনের ধারা ও হার নির্ধারণ করা হয় এবং সম্বন্ধপরতা নিরূপণ করা হয়।


আলফা, বিটা ও গামা পর্যায় তিনটির মধ্যে সূক্ষ্ম সীমারেখা টানা প্রায় অসম্ভব। কারণ ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এদের পৃথকভাবে চিহ্নিত করা খুব সহজসাধ্য কাজ নয়। এক পর্যায়ের সাথে অন্য পর্যায়ের সম্পর্ক প্রায় অবিচ্ছেদ্য। সাধারণত শ্রেণিবিভাগের জন্য আলফা ও বিটা পর্যায় পর্যন্ত পর্যালোচনার প্রয়োজন হয়। সব ক্ষেত্রে গামা পর্যায় পর্যন্ত অগ্রসর হতে হয় না।



যোজক বা ট্যাক্সোনমিক কী-এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ (Important characters of taxonomic key)

ক) কী-এর ভাষা হবে খুবই সরল;

খ) কী-এর বক্তব্য হবে টেলিগ্রাফিক;
গ) একাধিক বৈশিষ্ট্য সংযোজন করতে হলে প্রতিটি বৈশিষ্ট্যকে সেমিকোলন দিয়ে পৃথক করতে হবে;
ঘ) সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো কেবল কী-এর মধ্যে স্থান পাবে;
ঙ) কী (key) সবসময় য্যাগ্র (dichotomous) ধাঁচের হবে।
চ) কী সারণিবদ্ধরূপে উপস্থাপিত হবে, এবং
ছ) কী-এর প্রতিটি ধাপে অর্থাৎ যুগলে এক জোড়া করে বিপরীতধর্মী বা বিকল্প বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ থাকবে। এ বৈশিষ্ট্যগুলো সুনির্দিষ্ট ও নির্ণায়ক (diagnostic) হওয়া বাঞ্ছনীয়।

Leave a Comment