জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো প্রকৃতি থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে প্রকৃতিতে চক্রাকারে বারবার আসা-যাওয়াকে জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র বা Biogeochemical cycle বলে।

 যে প্রক্রিয়ায় প্রকৃতিতে কার্বন (C0↓2) গ্যাসরূপে পরিবেশ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে পরিবেশে আবর্তিত হয়ে প্রকৃতির কার্যাবলির সমতা বজায় রাখে তাকে কার্বন চক্র বলে। প্রকৃতিতে কার্বনের মূল উৎস হলো বায়ুমণ্ডলের C*O গ্যাস। বায়ুতে এ গ্যাসের স্বাভাবিক পরিমান হলো ০.০৩%। জীবদেহ কোষ গঠনের জন্য এবং সবুজ উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ প্রত্রিনয়ায় আত্তীকরণের জন্য কার্বনের প্রয়োজন।


 প্রকৃতিতে নিম্নলিখিত উপায়ে কার্বন ডাই-অক্সাইড তথা কার্বনের ভারসাম্য বজায় থাকে।

 


১. স্থলজ সবুজ উদ্ভিদ বায়ুমণ্ডল থেকে এবং জলজ সবুজ উদ্ভিদ পানিতে মিশে থাকা C*O_{2} গ্যাস গ্রহণ করে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় দেহে কার্বন সমন্বিত যৌগ তথা গ্লুকোজ (C_{6}*H_{12}*O_{6}) উৎপন্ন করে। প্রাণীরা উদ্ভিদের তৈরি কার্বন যৌগকে খাদ্য হিস্যো গ্রহণ করে কার্বন সংগ্রহ করে।
২. উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়ের দেহেই কার্বন সমন্বিত যৌগ তথা গ্লুকোজ জারিত হয়ে C*O_{2} গ্যাস উৎপন্ন হয় যা প্রকৃতিতে ফিরে যায়।

 


৩. উদ্ভিদজাত পদার্থ কাঠ, কয়লা, কাগজ, পেট্রোল ইত্যাদির দহন ক্রিয়ায় কার্বন যৌগ ভেঙে C*O_{2} গ্যাস উৎপন্ন হয় এবং প্রকৃতিতে মুক্ত হয়।

 


৪. উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃত্যুর পর পচনশীল জৈব বিয়োজক (জীবাণু) কর্তৃক বিয়োজিত হয়ে C*O_{2} গ্যাস নির্গত হয় ও প্রকৃতিতে ফিরে যায়।

 



৫. মাটিতে অবস্থিত বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি শ্বসন প্রক্রিয়ায় C*O_{2} গ্যাস উৎপন্ন করে যা বায়ুতে মিশে যায়।

 


৬. আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় C*O_{2} গ্যাস উৎপন্ন হয়ে বায়ুতে মিশে যায়।

 


৭. জলজ প্রাণী শামুক, ঝিনুক ইত্যাদির খোলক কার্বনেট দিয়ে গঠিত। এগুলো দহনের সময় অথবা উক্ত প্রাণীদের মৃত্যুর পর নানা প্রকার রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে C*O_{2} গ্যাস উৎপন্ন হয়ে পানিতে মিশে যায়। ফলে C*O_{2} গ্যাসের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে। সুতরাং মূলত জীবের শ্বসন ও খনিজ বস্তুর দহন প্রক্রিয়ায় পরিবেশের C*O_{2} গ্যাসের ভাণ্ডার গড়ে ওঠে এবং সবুজ উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় C*O_{2} গ্যাস গৃহীত হয়ে প্রকৃতির C*O_{2} গ্যাসের তথা কার্বনের ভারসাম্য বজায় থাকে

Leave a Comment