বাংলাদেশের কচ্ছপ বা কাছিম প্রজাতি কেনো দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে? এর কারণ কি?কিভাবে আমরা এদের সংরক্ষন করবো?এরা আমাদের অর্থনীতিতে কিভাবে অবদান রেখেই চলেছে?
![]() |
How the tortoise distroy in Banglades?and how to save them? |
বাংলাদেশে কচ্ছপ বা কাছিম Reptilia শ্রেণির অন্তর্গত একটি প্রাণী। এরা বর্তমানে Testudines বর্গের অন্তর্গত। বর্তমানে কচ্ছপ গোষ্ঠীর প্রায় ৩৩০ প্রজাতি জীবিত আছে। কচ্ছপ এর সমগ্র দেহ একটি শক্ত, প্রশস্ত খোলক দ্বারা আবৃত থাকে। এদের লেজ খুবই ছোট। অধিকাংশ কচ্ছপ বা কাছিম নির্বাক থাকে। কচ্ছপদের খাদ্যগ্রহণ স্বভাব বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। কচ্ছপরা ডিম্বজ, এদের ডিম গোলাকার। কচ্ছপ বা কাছিম ধ্বংসের কারণ, সংরক্ষণ ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব নিচে আলোচনা করা হলো:
ধ্বংসের কারণ: নিম্নে এদের ধ্বংসের কারণসমূহ আলোচনা করা হলো:
১.বর্তমান সময়ের আবহাওয়া ও তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে কচ্ছপ বা কাছিমের সংখ্যা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।
২. বাংলাদেশের নিম্নাঞ্চলের নদীসমূহ স্রোতহীন হয়ে মরে যাচ্ছে ফলে নদীতে পানি না থাকায় কাছিম এবং কচ্ছপ ক্রমে ক্রমে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
৩. বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এবং উপজাতীরা কাছিম ও কচ্ছপ এর ডিম ও মাংস খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে বলে এদের নির্বিচারে হত্যা করেছে।
৪. খাদ্যঘাটতি কারণে অনেক কচ্ছপ প্রজাতি ধ্বংসের সম্মুখীন।
৫. বাংলাদেশের এক শ্রেণির অসাধু ও অর্থলোভী ব্যবসায়ী কচ্ছপ এবং কাছিমের ডিম সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে ফেলে থা এতে দ্রুত হারে এদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
৬. কাছিম ও কচ্ছপের মাংস বিদেশে রপ্তানির জন্য অধিকহারে এদেরকে নিধন করা হচ্ছে ফলে এদের সংখ্যা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।
সংরক্ষণ:
১.অবাধ হারে কচ্ছপ এবং কাছিম শিকার বন্ধ করতে হবে।
২.কাছিমের ডিম গুলো নষ্ট না করে তা ফুটতে দিয়ে কাছিমের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৩. খামার স্থাপন করে সেখানে কাছিম চাষ করে এদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে সংরক্ষণ করতে হবে।
৪. বাংলাদেশের উপজাতি ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের কাছিম ও কচ্ছপের ডিম ও মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
৫. বাংলাদেশের পুকুর, ডোবা, নালা, নদ-নদী, খাল- বিলের যেখানে কাছিম বা কছম বাস করে সেখানের পরিবেশ তাদের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে হবে।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব: কচ্ছপ বা কাছিমের মাংস, হাড়, খোলক, স্কিউটস ও রক্ত মানুষের প্রিয় খাদ্য। কচ্ছপদের ত্বক থেকে তেল এবং রক্ত ও মাংস থেকে ঔষধ তৈরি করা হয়। কাছপের ডিম অত্যন্ত সুস্বাদু এবং তাতে বেশ প্রোটিন বিদ্যমান। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কচ্ছপের গুরুত্ব রয়েছে।
Kachuga smithii নামক কচ্ছপের মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর খোলক জার তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এরা পরিবেশ দূষণ মুক্ত করতে সাহায্য করে।
Geoclemys hamiltenii নামক কচ্ছপের মাংস খুবই সুস্বাদু। এদেরকে হাট-বাজারে বিক্রি করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে।
Aspideretes nigricans বা বোস্তামী কাছিম বাংলাদেশের এন্ডেমিক প্রজাতি। এদের খোলক বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। 'বর্তমানে এদের খোলক বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, বাংলাদেশে কচ্ছপ এবং কাছিমের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম।
Leave a Comment